এশিয়ান পেইন্টসের গ্লোবাল সিইও প্রজ্ঞান কুমার সম্প্রতি বাংলাদেশে আসেন। ঢাকায় তিনি এশিয়ান পেইন্টসের কালার নেক্সট ইভেন্টে যোগ দেন। পেইন্ট শিল্প এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ে সমকালের সঙ্গে কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাকির হোসেন
সমকাল: বাংলাদেশে এশিয়ান পেইন্টসের শুরুর সময়টা জানতে চাই।
প্রজ্ঞান কুমার: এশিয়ান পেইন্টস বাংলাদেশে কনফিডেন্স গ্রুপের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ২০০২ সালে যাত্রা করে। এই অংশীদারিত্ব সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বড় এবং শক্তিশালী হয়েছে। আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, এখন আমরা সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপস্থিত আছি। আমরা প্রথমে শুধু রঙের ক্যাটেগরিতে সীমাবদ্ধ ছিলাম এবং কিছু সাধারণ ডিজাইনের পণ্য নিয়ে শুরু করেছিলাম। এখন আমরা ইন্টেরিয়র এবং এক্সটেরিয়র ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন ধরনের আর্কিটেকচার কোটিংস উৎপাদন করছি।
সমকাল: কালার নেক্সট ইভেন্ট কীভাবে বাংলাদেশের স্থপতি এবং ডিজাইনার কমিউনিটিকে সাহায্য করে?
প্রজ্ঞান কুমার : কালার নেক্সট হলো একটি প্রক্রিয়া; যার মাধ্যমে রঙের জগতের প্রবণতাগুলো স্থপতি এবং ডিজাইনার কমিউনিটির সঙ্গে মিলিতভাবে তৈরি করা হয়। এটি শুধু এশিয়ান পেইন্টস এবং তার বিশেষজ্ঞ দল দ্বারা পরিচালিত হয় না। এটি একটি প্রক্রিয়া যেখানে স্থপতি, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার এবং বিভিন্ন সম্পর্কিত ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা একত্র হয়ে ডিজাইনের জগতে এবং অন্যান্য সম্পর্কিত ক্ষেত্রে কী ঘটছে তা খুঁজে বের করেন এবং এ কাজের সংকলন তৈরি করেন। এটি নির্দেশনা এবং ধারণা প্রদান করে যে, কীভাবে সংস্কৃতি, সমাজ, মানুষের জীবন এবং তাদের বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে কার্যকলাপ পরিবর্তিত হচ্ছে এবং পরিবর্তনগুলো কীভাবে ডিজাইন এবং রঙের ক্ষেত্রে আমাদের জন্য ইনপুট হিসেবে কাজ করে। এটি শুধু স্থপতিদের সহায়ক নয়, বরং একটি প্রক্রিয়া যা পুরো ট্রেন্ডগুলোর সহ-অনুসন্ধান এবং সহ-সৃষ্টির মাধ্যমে ডিজাইন কমিউনিটির চিন্তাধারার বিকাশে আরও সম্পৃক্ত হয়।
সমকাল: এশিয়ান পেইন্টস বাংলাদেশ কীভাবে নিজেকে অন্য পেইন্ট কোম্পানি থেকে পৃথক করে?
প্রজ্ঞান কুমার: এশিয়ান পেইন্টস নিজেকে ভোক্তাকেন্দ্রিক একটি কোম্পানি হিসেবে বিবেচনা করে। তাই আমাদের মূল লক্ষ্য হলো কীভাবে প্রক্রিয়াটিকে আরও ভালো করা যায়। আমরা কীভাবে এমন পণ্য সরবরাহ করতে পারি, যা উচ্চমানের এবং ভোক্তার ধারণার সঙ্গে মিলে যায়। আমাদের নিরন্তর উদ্ভাবনের প্রচেষ্টা, মান ও গুণমান বাড়ানো এবং প্রক্রিয়াটিকে ভোক্তাদের সহজলভ্য করা কাজের মূল অংশ। আমাদের পুরো যাত্রা ভোক্তার সঙ্গে একত্রে চলে এবং এটাই আমাদের বিশেষত্ব।
সমকাল: ‘কালার অব দ্য ইয়ার’ ২০২৪-এর জন্য ‘টেরা’ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুসন্ধান নিয়ে আলোচনা করুন।
প্রজ্ঞান কুমার: কালার নেক্সট নিয়ে গবেষণা এবং ‘কালার অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে ‘টেরা’ নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় এশিয়ান পেইন্টসের স্থপতি, ডিজাইনার এবং বিশেষজ্ঞ দল একসঙ্গে কাজ করেছে। তারা প্রচুর তথ্য বিশ্লেষণ এবং বিভিন্ন সম্পর্কিত ক্ষেত্রের প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করেছে। বিশ্লেষণের ফলাফলগুলো একটি ধারাবাহিক চিন্তাধারায় সাজিয়ে আরও বিস্তৃত একটি দলের সামনে উপস্থাপন করা হয়। যেখানে স্থপতি, অভ্যন্তরীণ ডিজাইনার এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তারা সবাই মিলে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, ‘টেরা’ বর্তমান সময়ে অঞ্চলের সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক মূল্যবোধকে সর্বোত্তমভাবে উপস্থাপন করে।
সমকাল: বাংলাদেশে বাজারের জন্য আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
প্রজ্ঞান কুমার: এশিয়ান পেইন্টস বাংলাদেশে উন্নতমানের পণ্য এবং সেবা প্রদানে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভোক্তাকেন্দ্রিক সমাধান সরবরাহে মনোনিবেশ করে। আমরা নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে অনেক দূর এগিয়েছি। ২০২২ সালে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগে আমাদের একটি নতুন অত্যাধুনিক প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে, যা দেশের সেরা মানের ইমালশন উৎপাদন করে। এ ইমালশনই চমৎকার রং তৈরির মূল উপাদান। এশিয়ান
পেইন্টস সুবিধা, পণ্য ও সেবা-প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে, যা পুরো রং এবং সজ্জার জগৎকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে।
সমকাল: কালার নেক্সট ২০২৪ থেকে আপনার পছন্দের ট্রেন্ড কী?
প্রজ্ঞান কুমার: আমার প্রিয় ট্রেন্ড নিঃসন্দেহে ‘সয়েল’। এটি একটি অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প, যেখানে অল্পকিছু দিয়ে অনেক কিছু সৃষ্টি করা যায় এবং স্থানীয়ভাবে উপলব্ধ জিনিসপত্র, কারিগরি দক্ষতা এবং স্থানীয় শিল্পীদের কাজের মাধ্যমে অসাধারণ ডিজাইন তৈরি করা যায়। আমার কাছে এটি অত্যন্ত মুগ্ধকর। শুধু দারুণ ডিজাইনের জন্য নয়, এটি আমার এবং সবার সঙ্গে যে তীব্র ভালোবাসার সংযোগ সৃষ্টি করে, সেটি অনেক মূল্যবান। মানুষ তাদের ভূমি, জীবন এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের বিষয়গুলো নিয়ে অনেক আবেগের সঙ্গে কথা বলতে পারে, যা অত্যন্ত চমৎকার। এটি আমার জন্য ব্যক্তিগত এবং অত্যন্ত আবেগময়।
News Source: সমকাল